বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জার্মানি উচ্চ শিক্ষার জন্য নানা রকম সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। স্নাতকোত্তর থেকে শুরু করে পিএইচডি পর্যায় পর্যন্ত আবেদনের সুযোগটি চালু আছে। আমাদের আজকের আয়োজনে খাদিজাতুল কোবরা জানাচ্ছেন জার্মানিতে পড়তে আসার গল্প।
১. যেভাবে আবেদন করেছি - লক্ষীপুরের প্রতাপগঞ্জ হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক শেষ করে এরপর কফিল উদ্দিন ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করি। তারপর নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১২-১৩ সেশনে কৃষি বিষয়ে স্নাতক ভর্তি হই। তারপর ২০১৮ সাল থেকে আইএলটিএস এর প্রস্তুতি নেই। এরপর ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বর মাসে জার্মানিতে পড়তে আসি।
২. জার্মানির পড়াশোনা - জার্মানিতে দুই সেমিস্টার ভর্তি হওয়ার সুযোগ আছে। একটি সামার এবং আরেকটি উইন্টার। সামার সেমিস্টারের কোর্স থাকে তবে উইন্টারে কোর্স বেশি থাকে। জার্মানিতে পড়তে আসার জন্য স্নাতকের পর হাতে ৮-৯ মাস সময় রাখা প্রয়োজন। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অফার লেটার গ্রহণ করতে হয়, তারপর ভিসা প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য স্নাতকের সনদ, আই এল টি এস এর সনদ এবং কিছু ক্ষেত্রে সুপারিশ পত্র প্রয়োজন হয়। আই এল টি এস এর নম্বর কে অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আই এল টি এস এর নম্বর প্রয়োজন না হলেও ভিসার ক্ষেত্রে এটি প্রয়োজন। ভর্তির আবেদনের সময় মোটিভেশনাল চিঠি লিখতে হয় জেটিতে থাকে কেন পড়তে চাই অথবা পড়ার লক্ষ্য কি।
৩. উচ্চশিক্ষার খরচ - জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার জন্যে কোনো টিউশন ফি নেই। পড়াশোনার জন্য নানা ধরনের বৃত্তি পেয়ে থাকে শিক্ষার্থীরা। নিজের খরচ চালাতে শিক্ষার পাশাপাশি চাকরি করতে পারেন। আমি কালসেল শহরে থাকি। আমি এখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউনিভার্সিটি অব গেটিংজেন ইন্টারন্যাশনাল স্কলারশিপের আওতায় বৃত্তি পাচ্ছি। আপনি থিসিস করার সময়ও বৃত্তি পাওয়ার সুযোগ পাবেন।
৪. ভাষা শেখা জরুরী - আমি দুই সপ্তাহে সাধারণ জার্মান ভাষা শেখার সুযোগ পাই। জার্মানিতে দৈনন্দিন জীবনের জন্য চলাফেরা করার কথোপকথন জানা জরুরী। আমার আশেপাশের মানুষ এরা কি বলছে, কোন কথায় আনন্দ পাচ্ছে এবং কোন কথায় বিরক্ত হচ্ছে এসব ভাষা না জানলে বোঝা কঠিন। এছাড়া শিক্ষার জন্য ভাষাটা জানা গুরুত্বপূর্ণ।
৫. ভাষা শেখার সুযোগ - আপনি জার্মান ভাষার ঢাকা থেকে শিখতে পারবেন। ঢাকার গ্যেটে ইনস্টিটিউট থেকে জার্মান ভাষা শেখা সম্পর্কে জানা যাবে। জার্মানি আসার আগেই এ-ওয়ান পর্যায়ের জার্মান শেখা খুব জরুরি। আর যদি বি-ওয়ান পর্যায়ে জার্মান ভাষা জানেন তাহলে খুবই ভালো। আগের থেকে ভাষা জানা থাকলে জার্মানি এসে আপনার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে। আপনি যদি অনার্সের শেষের দিকে থাকেন এবং জার্মানিতে আসার ইচ্ছা থাকে আপনার তাহলে আপনি ভাষা শিখতে পারেন।
৬. আরো কিছু - মোটিভেশন এর চিঠি এবং আবেদন পত্র সব নিজে লেখাটাই ভালো। একজন স্নাতক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এমনটাই আশা করে থাকে।
Comments